Bangladesh Science News

ABOUT AUTHOR

test

Saturday, November 25, 2017

বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার

০১. ডাইনোসরের বিলুপ্তি ব্যাখ্যার জন্য কে-টি গ্রহাণু তত্ত্ব (১৯৮০)

ওয়াল্টার আলভারেজ এক স্বীকার্যে বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের শিলার নমুনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ইরিডিয়ামের উপস্থিতি প্রমাণ করে যে, একটি গ্রহাণু সংঘর্ষের কারণেই ডাইনোসরেরা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। ভূ-অভ্যন্তরে মাটির একটি স্তরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ইরিডিয়াম পাওয়া গিয়েছিল। এই স্তরটির নাম কে-টি সীমানা। ইরিডিয়াম গ্রহাণুতে বিপুল পরিমাণে থাকে। ভূ-অভ্যন্তরের প্রতিটি স্তর একেকটি সময়কে নির্দেশ করে। কে-টি সীমানা আজ থেকে ৬৫ মিলিয়ন বছর আগের সময়কে নির্দেশ করে। আর এ সময়েই ডাইনোসর ধ্বংস হয়েছিল। দুটি ঘটনা খাপে খাপে মিলে যায়।

০২. ডাইনোসরের প্রথম জীবাশ্ম চিহ্নিতকরণ (১৮২০ - ১৮৫০)

১৮২২ সালে ভূবিজ্ঞানী উইলিয়াম বাকল্যান্ড ইংল্যান্ডে অতি বৃহৎ কিছু দাঁত খুঁজে পান। সে সময় এই দাঁত ব্যাখ্যা করার কোন উপায় ছিল না। ১৮৪২ সালে স্যার রিচার্ড ওয়েন ইংল্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে পাওয়া জীবাশ্মগুলো যে বিটিত্র ও বৃহৎ প্রাণী গোষ্ঠীর অস্তিত্বকে নির্দেশ করছে সে গোষ্ঠীর নাম রাখেন “ডাইনোসর”। প্রথম যে ডাইনোসরের নাম রাখা হয়েছে তা হল “মেগালোসরাস”।

০৩. জীবনের মৌলিক উপাদান কৃত্রিমভাবে তৈরী (১৯৫৩)

স্নাতক ছাত্র স্ট্যানলি মিলার অন্যান্য বিজ্ঞানীদের চিন্তাধারার সাহায্য নিয়ে আদিম নির্জীব পৃথিবীর প্রতিকূল পরিবেশ কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি করেন। তিনি একটি চেম্বারের মধ্যে কেবল হাইড্রোজেন, পানি, মিথেন ও অ্যামোনিয়া ভর্তি করেন। এরপর সেই পানিকে উত্তপ্ত করে ফুটিয়ে তোলেন এবং তাতে বজ্রপাতের মত বৈদ্যুতিক ডিসচার্জ সরবরাহ করেন। এটা ছিল আদিম পৃথিবীর অনেকটা সার্থক সিম্যুলেশন। এক সপ্তাহ পর মিলার সেখানে বেশ কিছু জৈব যৌগ গঠিত হতে দেখেন যার মধ্যে জীবনের গাঠনিক একক “অ্যামিনো এসিড” ও ছিল।

০৪. হাইড্রোথার্মাল ভেন্টের চারদিকে নতুন ধরণের জীবের সন্ধান লাভ (১৯৭৭)

বব ব্যালার্ড এবং অ্যালভিন নামক নিমজ্জিত জহাজের ক্রুরা গভীর সমুদ্রের হাইড্রোথার্মাল ভেন্টের চারদিকে বিস্ময়কর এবং সম্পূর্ণ নতুন ধরণের জীবের সন্ধান পায়। এই জীবগুলো সূর্যের শক্তি ছাড়াই বেঁচে থাকতে পারে। মাঝ সমুদ্রের আগ্নেয় রিজবিশিষ্ট স্থানগুলোতে গভীর সমুদ্রের শীতল পানি ভূত্বকের খাঁজের মধ্যে প্রবেশ করে। এর ফলে উষ্ণ প্রস্রবণের সৃষ্টি হয়। উত্তপ্ত পানি উপরের দিকে উঠতে থাকে এবং এভাবে ফোকর থেকে আসা ফুটন্ত পানির সাথে সমুদ্র তলার শীতল পানি মিশে যায়। এর ফলে খনিজ কণায় ভর্তি উষ্ণ ও কালো তরলের এক বিশাল স্তরের সৃষ্টি হয় যা উপরের দিকে উত্থিত হতে থাকে। এখানকার রাসায়নিক পদার্থগুলো সমুদ্রতলে এক শক্তিশালী বাস্তুতন্ত্র গড়ে তলে। এই বাস্তুতন্ত্রেই এই জীবগুলো বেড়ে উঠে।

০৫. বার্গেস শেইল (১৯০৯)

চার্লস ওয়ালকট কানাডার পাথুরে পর্বতমালার বেশ উপরের একটি স্থানে ক্যামব্রিয়ান জীবাশ্মের এক মাতৃ ধাতুনালী (mother lode) খুঁজে পান। আজ থেকে ৫০০ মিলিয়ন বছর পূর্বে পৃথিবীতে জীবন কেমন ছিল এই জীবাশ্ম তার ধারণা দেয়। তিনি ৬৫,০০০ এরও বেশি নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলোকে শ্রেণীবিভক্ত করেন। এর মাধ্যমে প্রমাণ করেন, এগুলো বর্তমানে জীবিত প্রাণীদেরই পূর্বপুরুষ।

০৬. প্রজাতির শ্রেণিবিন্যাস (১৯৩৫)

শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যার জনক কার্ল লিনিয়াস নামকরণ পদ্ধতি প্রণয়ন করেন। বর্তমানে জীবিত সকল জীবের ক্রমান্বয়ে সজ্জিত করা এবং তাদের শ্রেণিবিন্যাস করার মাধ্যমে এই নামকরণ পদ্ধতি কার্যকর হয়। এর অবশ্য অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। মূলত ভৌত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে গঠিত এই পদ্ধতিতে প্রথমে সকল জীবকে রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। রাজ্য থেকে বিভিন্ন শ্রেণী, তা থেকে বর্গ এবং তারপর পরিবার, গণ ও সবশেষে প্রজাতি। এভাবে উপর থেকে নিচের দিকে আসতে থাকে।

০৭. প্রাকৃতিক নির্বাচনের মতবাদ (১৮৫৮)

চার্লস ডারউইন “On the Origin of Species by Means of Natural Selection” বইটি প্রকাশ করেন। এই বইয়ে পৃথিবীতে জীবনের সৃষ্টি সম্পর্কিত প্রচলিত বিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জ করেন। ডারউইন এইচএমএস বিগ্‌ল জাহাজের অবৈতনিক নিসর্গী হিসেবে দীর্ঘ পাঁচ বছর দক্ষিণ আমেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ করে কাটিয়েছেন। ১৮৩২ সালে তার অভিযান শুরু হয়েছিল। এই অভিযানের উপাত্তগুলোই তাকে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তনবাদ প্রতিষ্ঠায় উদ্বুদ্ধ করেছিল। গালাপাগোস দ্বীপ থেকে পাওয়া উপাত্তগুলো সবচেয়ে বেশি কাজে লেগেছে। প্রকাশের পর থেকে এখনও তার তত্ত্ব নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে।

০৮. অস্ট্রালোপিথেকাস অ্যাফারেনসিস বা “লুসি” (১৯৭৪)

ডোনাল্ড জোহানসন ইথিওপিয়ায় ৩.২ মিলিয়ন বছর বয়সের এক নারী হোমিনিডের আংশিক কঙ্কাল আবিষ্কার করেন। জোহানসন বিট্‌ল্‌স ব্যান্ডের “দ্য স্কাই ডায়মন্ড্‌স” অ্যালবামের লুসি নামক গানের নামে এই রমণীর নাম রাখেন লুসি। এই গান বেছে নেয়ার কারণ, তাদের দল যখন কঙ্কালটি খুঁজে পায় তখন রেডিওতে এ গানটিই বাজছিল।

০৯. Laetoli পদচিহ্ন (১৯৭৮)

মেরি লিকির নেতৃত্বাধীন একটি দল তানজানিয়ার Laetoli নামত স্থানে অস্ট্রালোপিথেকাসদের পদচিহ্নের জীবাশ্ম খুঁজে পায়। ৩.৫ মিলিয়ন বছর আগে দুই ব্যক্তি ভেজা আগ্নেয় ছাইয়ের উপর দিয়ে হেটে গিয়েছিল। সেই ছাই সিমেন্টের মত শক্ত হয়ে যাওয়ায় পদচিহ্ন রক্ষিত হয়েছে। মানুষের এই পূর্বপুরুষদের দুই পায়ে ভর করে চলার প্রমাণ আছে। এ থেকে বোঝা যায় হোমিনিডরা উঁচু হয়ে চলতে পারত।

১০. Toumai খুলি (২০০২)

Michel Brunet মাটি খুঁড়ে এখন পর্যন্ত পাওয়া প্রাচীনতম হোমিনিড জীবাশ্ম উত্তোলন করেন। মধ্যা আফ্রিকার চাদের একটি মরুভূমিতে এই জীবাশ্ম পাওয়া যায়। ৬ থেকে ৭ মিলিয়ন বছর বয়সের এই খুলির অংশগুলোর বৈশিষ্ট্য মানুষের মাথার খুলির মত। এগুলো দক্ষিণ ও পূর্ব আফ্রিকার বাইরের অনেক স্থানে পাওয়া গেছে। এ থেকে বোঝা যায়, এই পুরো মহাদেশ জুড়ে তখন মানুষের বিবর্তন চলছিল।

No comments:

Post a Comment